চিকিৎসার গাফিলতিতে শিশু মৃত‍্যুর অভিযোগ : ব্লক স্বাস্থ‍্য দপ্তরে অভিযোগ দায়ের

13th January 2021 9:18 pm বর্ধমান
চিকিৎসার গাফিলতিতে শিশু মৃত‍্যুর অভিযোগ : ব্লক স্বাস্থ‍্য দপ্তরে অভিযোগ দায়ের


আমিরুল ইসলাম ( ভাতার ) : চিকিৎসার গাফেলতিতে শিশু মৃত্যুর অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে । বুধবার সকালে শিশুটির মৃত্যুর পরেই বিক্ষোভের আশঙ্কায় হাসপাতাল থেকে তড়িঘড়ি ভাতাড় থানায় খবর দিলে পুলিশবাহিনী চলে আসে । ফলে কোনও প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি । তবে মৃত শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে এনিয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে । বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন ভাতার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সংঘমিত্রা ভৌমিক। জানা গেছে,গত সোমবার সকাল ৭ টা নাগাদ প্রসব বেদনা নিয়ে ভাতাড় স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন ভাতাড় থানার আড়া গ্রামের গৃহবধূ পূর্ণিমা দাস । ওদিনই সকাল ৯ টা নাগাদ তিনি একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন । এটিই ছিল তাঁর প্রথম সন্তান । আড়াই কেজি ওজনের ওই শিশুটির জন্মানোর পর কোনও শারিরীক সমস্যা ছিল না বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে । পূর্ণিমা দেবীর স্বামী সুশান্ত দাস বলেন, ‘গতকাল রাতে আমি বাড়ি চলে যাই । রাতে হাসপাতালে স্ত্রীর কাছে আমার পিসি ছিলেন । আজ আমার স্ত্রীকে ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল । তাই এদিন খুব সকালে আমি হাসপাতালে চলে আসি । কিন্তু এসে দেখি আমার ছেলের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, চোখে পিচুটি কাটছে । তখন নার্সদের কাছে বলি । কিন্তু নার্সরা জানান সাড়ে আটটা, নটা নাগাদ ডাক্তারবাবু এসে দেখবেন । এদিকে আমার ছেলের শ্বাসকষ্ট বাড়ছে দেখে নার্সদের বারবার অনুরোধ করি যাতে তাঁরা এসে আমার ছেলের চিকিৎসা করেন । কিন্তু নার্সরা তখন মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন । তারই মধ্যে নার্সরা বলেন গরম জল এনে বাচ্ছার চোখ দুটো পরিস্কার করে দিতে । নার্সদের কথামত আমি তাই করি । তারপর ৭ টা নাগাদ ছেলের তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয় । এই দেখে ছেলেকে কোলে নিয়ে আমি নার্সদের কাছে যাই । তখন নার্সরা জানায় আমার ছেলে মারা গেছে ।” স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,নার্সদের কাছ থেকে এই কথা শোনার পরে মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে । এদিকে বিক্ষোভের আশঙ্কায় হাসপাতাল থেকে ভাতাড় থানায় খবর দেওয়া হয় । খবর পেয়েই হাসপাতালে চলে আসে পুলিশবাহিনী । যার ফলে কোনও প্রকার অপ্রীতিকর অবস্থার মুখে পড়তে হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। মৃত শিশুর কাকা বিনয় দাসের অভিযোগ, ‘শিশুটিকে ঠিক সময়ে অক্সিজেন ও ওষুধ দিলে হয়তো এই ঘটনা ঘটত না । হাসপাতালের গাফিলতির কারনেই বাচ্ছাটির এই পরিনতি হল । ভাতাড় হাসপাতালকে স্টেট জেনারেল হাসপাতালে উন্নীত করার পর শুধু হাসপাতাল ভবন রঙচঙে করা হয়েছে মাত্র । সেভাবে চিকিৎসা পরিষেবার উন্নতি হয়নি ।’ বিনয়বাবু জানিয়েছেন, তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন । উপযুক্ত তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন মৃত শিশুর পরিবারের লোকজন । এই বিষয়ে ভাতার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সংঘমিত্রা ভৌমিক বলেন, ” অভিযোগ পেয়েছি । বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে । এনিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছেও জানিয়েছি ।”





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।